সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়: ওয়ারেন বাফেট এর পরামর্শ

একজন সফল উদ্যোক্তা হচ্ছেন ওয়ারেন বাফেট । একাধারে তিনি একজন মাল্টি ব্যবসায়ি, সমাজ সচেতন, সমাজ কল্যাণকারী এবং বিংশ শতকের সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারী । ২০০৮ সালে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকায় শীর্ষে তার নাম উঠে । ২০১১ সালে তিনি ধনী ব্যক্তি হিসেবে লাভ করেন তৃতীয় স্থান । আসুন জেনে নিই সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়। 

ওয়ারেন বাফেট এর সফল উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প

কিভাবে তিনি এত টাকা অর্জন করেছিলেন ?

আপনার কি ধারণা তিনি একবারও ব্যর্থ হননি ?

আসলে তিনি ও তার জীবনে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন । কিন্তু তিনি হার মানেননি । হার না মানা গল্প আপনাকে আরো উৎসাহিত করবে, আপনার চলার পথ আরো মসৃণ করবে ।

শৈশব থেকেই ওয়ারেন বাফেটের স্বপ্ন ছিল নিজের পায়ে দাঁড়ানোর । ছোট থেকেই তিনি প্রচুর বই পড়তেন । এক্ষেত্রে লাইব্রেরী থেকে সংগ্রহ করা On thousand way to make 1000 Dollar বাফেটকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে ।

ছোটবেলা থেকে তিনি তার দাদার দোকানে কাজ করতেন । এমনকি তিনি অন্যের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হকারের মত ম্যাগাজিন বিক্রি করতেন ।   ১১ বছর বয়সে তিনি তিনটা শেয়ার ক্রয় করেন। হাই স্কুলে থাকাকালে, তিনি তার বাবার কিছু সম্পত্তি বিনিয়োগ করেন এবং একটা খামার ক্রয় করেন।

তার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে নিজের উপর বিনিয়োগ করা।

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার মূলমন্ত্র

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার মূলমন্ত্র


যা কাজ পাও তাই শুরু করো, চাকরি, ব্যবসা, অফিসিয়াল, নন অফিসিয়াল, সেলস ম্যান, সেলস অফিসার, মার্কেটিং অফিসার, ফ্লোর ইনচার্জ, সার্বেয়ার, স্টোর কীপার, ফিল্ড অফিসার, কালেকশান অফিসার, গার্মেন্টসের কিউসি, টীম  মেম্বার থেকে শুরু করে সব কাজ। চাকরি দরকার, চেয়ার না।

কাজ করলে গা ভেঙ্গে যায়না।  যাদের লজ্জার ভয়ে তুমি এসব কাজ ছোট করে দেখছো, তারা তুমি দুপুরে উপুস করে আছো এটা জানবেও না। তারা তোমারে খাওয়ায় না পরায়?

খালি পরামর্শ আর উপদেশ। এইটা কইরো না, হেইটা কইরো না। কিরে ভাই, আমি পানের দোকান করলে আপনার কি? পরামর্শ প্রবণ গোটা জাতি..

উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়

উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়


কাজে কোন ‘না’ নেই। যাই পাও তাই করো। কর্মই ধর্ম । আর কর্মই ধর্ম করতে গেলে তোমার চর্ম হতে হবে পুরো । একেবারে মোটা চামড়া। পাতলা চামড়ার জন্য এই দুনিয়া না ৷ এখানে কথা শুনতে হবে, গালি শুনতে প্রস্তুত থাকা লাগবে।

পানের দোকান দাও, যদিও এতে তোমার গুস্টির জাত চলে যাবে। ইজ্জত ধুলোয় মিশে যাবে। CNG চালাও। মাত্র ৪৫০ টাকা দৈনিক জমা । মাসে আয় প্রায় ৩০০০০/-। ভাবা যায়? অবশ্য এতে তোমার পরিবারের সম্মান হানি হবে ৷ তোমার কাছে কেউ বউ ও দিবে না! আরে আজব। বিয়ে করতে চাইলে সমস্যা, অবৈধ প্রেমে বাঁধা নেই! না খেয়ে মরলে খোঁজ নেই। CNG চালালে অচ্যুত! অলরেডি পাঠাও, উবার তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। পোলাপান এখন আয়ের বহু পথ খুঁজে নিয়েছে৷ তারা ফুড পান্ডায় পিৎজা সাপ্লাই দিয়ে কমিশন নেয়।

নিজেকে বদলাও ! সফলতা আসবে

অত ভাবনার কিছু নেই। যা খুশি করো । শরবত বিক্রি করো।

  • তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান শহরে রুহ আফজা ফ্লেভরের শরবত বিক্রি করতেন।
  • ভারতের নরেন্দ্র মোদি রেল স্টেসানে চা বিক্রি করতেন।
  • আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার বিক্রি করতেন বাদাম।

যাদের তুমি শরম পাচ্ছ, আর দশ বছর পর নিজেই নিজের কাছে লজ্জা পাবা। তারা তোমার কোন উপকারেই আসেনি। লোহার জাহাজ পানিতে ভাসানো হবে জেনে এলাকার লোকজন (সম্ভবত যে সি পেরিয়ারকে) ঢিল মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল । অথচ, সেটাই হয়ে গেল সভ্যতার বিশাল আবিস্কার।

যারা হাসে, তারা নেংটি ইঁদুরের মত আজীবনই হাঁসবে। তাদের ধারণা একটাই, ধুর পোলাটারে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।

নিজের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দাও। স্বপ্ন টাকে জিইয়ে রাখো। অনেকে পাগল ডাকবে। আমার ধারণা কিছুটা পাগলা টাইপের হলেই ভালো । সারা জীবন ফার্স্ট হয়ে যাওয়া ছেলেটাকে SSC ক্লাসে ফেল করতে দেখেছি। ব্যাক বেঞ্চারকে বিশাল প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে দেখেছি। মোটর গ্যারাজে আজই কাজ শুরু করে দাও, শরম পাওয়া ছেলেটার চাইতে দশ বছর এগিয়ে থাকবে তুমি।

পড়ালেখা করতে করতে আতেঁল হয়ে যাবার পক্ষে আমি না। এক্সট্রা অর্ডিনারী ব্রেন থাকলে এই পোস্ট তোমার জন্যে না। এভারেজ মেধার তরুণদের নিয়ে কথা হচ্ছে৷ এভারেজ মেধাবীরা কেডিএস, কে এসআরএম, ওয়েল গ্রুপের মালিক হতে পেরেছে। টপার মেধাবীরা সেখানে চাকরি করছে

এসো তারুণ্যে জাগি, আগামীর পৃথিবীটা তোমার জন্যে অপেক্ষা করছে, সফলতা তোমাকেই হাতছানি দিয়ে ডাকছে । 

আপনাকে শুরু থেকেই দূর্দান্ত হতে হবে না তবে আপনাকে দুর্দান্তভাবে শুরু করতে হবে

উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়

আপনাকে শুরু করতে হবে সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে, এরপর তা অর্জনের জন্য ক্রমাগত পরিশ্রম করতে হবে। আমাদের অনেকের ধারণা সফল উদ্যোক্তা হতে হলে কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে কিন্তু পরিশ্রমের সাথে সাথে একজন উদ্যোক্তাকে হতে হবে ডায়নামিক  কারণ একজন উদ্যোক্তা কে পিয়ন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের অনেক ভিআইপি সাথে পর্যন্ত কথা বলতে হয়। সেক্ষেত্রে তাকে প্রতিটি পর্বে নিখুঁত পারফরম্যান্স দেখাতে হয়। ব্যবসার লক্ষ্য নির্ধারণ সফল হলে তার পরিকল্পনা করাও খুব সহজ হয়। আপনি যে পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন সে সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট পণ্য সম্পর্কে আপনার সাধারণভাবে আবেগ ও আগ্রহ থাকতে হবে। আবেগ হচ্ছে তাই যা আপনাকে সামনে নিয়ে যায়, কাজের প্রতি আপনার আবেগই আপনাকে রাত দুইটায় বিছানায় যেতে এবং ভোর ৬টায় ঘুম থেকে কাজে লেগে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে।

 

 

Leave a Comment