কিভাবে ব্যাংক লোন পাওয়া যায় ? সহজে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় ২০২৩

ব্যাংক লোন পাওয়ার সহজ উপায়

ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় কি? যদি আপনি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সময় ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত শর্তগুলো পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনি সহজে লোন পেতে পারেন। সুতরাং ব্যাংকের শর্তগুলো আগে পূরণ করে তারপর ব্যাংক ঋণের জন্য আবেদন করা উচিত।

ব্যাংক ঋণের ধরন ও প্রকারভেদ

ব্যাংক বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের লোন প্রদান করে থাকে। লোন অনেক ধরনের হতে পারে।
যা আপনার উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে। আপনি কোন ধরনের লোন, কি উদ্দেশ্যে নিতে চান, সেটা
আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে প্রথমে।

ব্যাংক লোন কত প্রকার ও কি কি?

  •  পার্সোনাল লোন: ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যে লোন প্রদান করা হয় সেটাই পার্সোনাল লোন বা ব্যক্তিগত লোন এটি অনেক সময় স্যালারি লোন ও বলা হয়ে থাকে ।
  • বিজনেস লোন: ব্যবসায়ের প্রয়োজনে যে ঋণ নেয়া হয়ে থাকে সেটিকে ব্যবসায়িক লোন বা বিজনেস বলা হয়ে থাকে
  • হোম লোন: বাড়ি তৈরি বা ক্রয় করার জন্য যে ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে সেটি হোম লোন
  • অটো লোন: গাড়ি কেনার জন্য যে লোন নেয়া হয়ে থাকে সেটি অটো লোন বা কার লোন বলা হয়ে থাকে
  • এডুকেশন লোন বা স্টুডেন্ট লোন: পড়াশোনা করার জন্য লোন।
  • প্রবাসী লোন: দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য লোন।
  • কৃষি লোন: কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য বা কৃষিকাজ সহায়তার জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয় এর জন্য বা  ফসল উৎপাদনের জন্য বীজ, সার, ঔষধ করার জন্য এ ধরনের লোন প্রদান করা হয়।

ব্যাংক লোনের প্রকারভেদ:

  •  দীর্ঘমেয়াদী লোন: দীর্ঘমেয়াদী লোন হলো, যেসব লোন এক বছরের বেশি সময়ের জন্য দেওয়া
    হয়। যেমন, পার্সোনাল লোন, এডুকেশন লোন, হোম লোন, বিজনেস লোন ইত্যাদি।
  •  স্বল্প মেয়াদী লোন: স্বল্প মেয়াদী লোন হলো, যেসব লোন এক বছরের কম সময়ের জন্য দেওয়া
    হয়। যেমন, কৃষি লোন, প্রবাসী লোন ইত্যাদি।

ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় খুবই সহজ বিষয় যদি আপনি জানতে পারেন ব্যাংক লোন পেতে হলে আপনাকে কি কি কাগজপত্র বা তথ্য প্রদান করতে হবে। আজকে আমরা পুরো বিষয় সম্পর্কে একটি কমপ্লিট ধারণা নেবো, সেজন্য আমাদেরকে আগে জানতে হবে ব্যাংক কিভাবে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়-

ব্যাংক লোন পাওয়ার শর্ত

1. ব্যবসায়িক কার্যক্ষমতা/টেকসইতা
2. ব্যবসা পরিস্থিতি
3. ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা
4. আপনার ক্রেডিট ইতিহাস
5. আপনার চরিত্র
6. আপনার জামানত
7. আপনার ব্যক্তিগত গ্যারান্টি
8. আপনার ক্রেডিট স্কোর
9. সরকারী ঋণ গ্যারান্টি

এছাড়া ব্যাংক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আরও যে সকল বিষয় বিবেচনায় নেয় সেগুলো হলো-

1. স্টার্টআপ খরচ
2. রাজস্ব অনুমান (আয়)
3. অপারেটিং খরচ
4. ঋণ
5. ইক্যুইটি রিটার্ন
6. কোম্পানির মান

ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এসএমই ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস/দলিলাদির চেকলিস্ট  এসএমই উদ্যোক্তাদের অনেকেরই ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন ও প্রয়োজনীয় পূর্ব প্রস্তুতি বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। এসএমই উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ আবেদনকারীদের কাছ থেকে যেসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে থাকে তার একটি চেকলিষ্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বলা প্রয়োজন যে, ঋণ প্রদানের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নীতিমালার আলোকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ কর্তৃক নেয়া হয়ে থাকে। এ চেকলিষ্ট ব্যাংক ঋণ গ্রহণে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের এ ক্ষেত্রে পূর্ব প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। এ চেকলিষ্ট বিষয়ে যে কোন পরামর্শ ও সহযোগিতার জন্য উদ্যোক্তাগণ এসএমই ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই এন্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

ব্যাংক থেকে লোন নিতে কি কি লাগে?

  •  নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্স।
  •  ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকে চলতি হিসাব।
  •  জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • ড্রাগ লাইসেন্স (ঔষধ ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য)।
  •  বিএসটিআই সার্টিফিকেট (খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে )।
  • ডিসির অনুমোদন (ডিজেল ও এসিড ব্যবসার ক্ষেত্রে)।
  • পেট্রোবাংলার সার্টিফিকেট (ডিজেল ও অকটেন ব্যবসার ক্ষেত্রে)।
  •  বিগত ১ থেকে ৩ বৎসরের ব্যাংক প্রতিবেদন (বিভিন্ন ব্যাংকের চাহিদা ভিন্ন)।
  •  দোকান/ঘর ভাড়া চুক্তিনামা।
  •  পজিশনের দলিল।
  •  টিন সার্টিফিকেট
  •  ভ্যাট সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  •  বিদ্যুৎ বিল।
  •  টেলিফোন বিল।
  •  সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।
  •  কর্মচারীদের নাম, পদবী, এবং মাসিক বেতনের তালিকা।
  • IRC ও ও IRE সার্টিফিকেট (আমদানী ও রপ্তানী ব্যবসার ক্ষেত্রে)।
  •  মজুদ মাল ও তার বর্তমান মূল্যের তালিকা।
  •  স্থায়ী সম্পদের তালিকা ও মূল্য।
  •  দেনাদারের তালিকা।
  • পাওনাদেরর তালিকা।
  •  বর্তমানে অন্য কোথাও ঋন থাকলে তার বিবরণী।
  •  বাংলাদেশ ব্যাংকের CIB রিপোর্ট, এখানে উলেখ্য যে, এই রিপোর্টের ফরম সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানই উদ্যোক্তাকে সরবরাহ করে এবং উদ্যোক্তা উক্ত ফরম যথাযথভাবে পূরন করে দিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিপোর্ট সংগ্রহের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে।
  •  ঋণের আবেদনকারী এবং গ্যারান্টার উভয়ের পাসপোর্ট সাইজ ছবি। এখানে উল্লেখ্য যে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী একাধিক গ্যারান্টার নিতে পারেন। অনেক প্রতিষ্ঠানই মূল গ্যারান্টোরের অতিরিক্ত গ্যারান্টার হিসেবে পরিবাররের সদস্যকে গ্যারান্টার হিসেবে নিয়ে থাকে।
  • গ্যারান্টার ব্যবসায়ী হলে তার ট্রেড লাইসেন্স ও CIB রির্পোট ।
  •  ব্যবসার বিগত ১ বৎসরের বিক্রয় ও লাভের হিসাবের বিবরনী।
  • প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট অব ইনকরপোরেশন এবং মেমোরেন্ডাম অব আর্টিক্যালস ।
  •  প্রাইভেট লিমিটডে কোম্পানীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্তের রেজুলেশন।
  •  লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে অডিটকৃত আর্থিক বিবরণী, ট্রেড একাউন্ট, লাভ-ক্ষতির হিসাব, ব্যালেন্স শীট এবং
  • income ষ্টেটমেন্ট।
  •  লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে কোম্পানীর বর্তমান গ্রাহকদের তালিকা।
  •  পার্টনারশীপ ব্যবসার ক্ষেত্রে Joint Stock Company থেকে রেজিষ্টার্ড এবং নোটারী পাবলিক দ্বারা নোটারাইজড পার্টনারশীপ ডীড।
  •  ঋণ গ্রহন/ হিসাব খোলার জন্য পার্টনারদের রেজুলেশন।

উল্লেখিত কাগজপত্র মোটামোটিভাবে সমস্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই ঋণ গ্রহণের জন্য প্রয়োজন হয়। এছাড়াও

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনবোধে ঋণ আবেদনকারীর কাছ থেকে অন্য প্রয়োজনীয় দলিলাদি ও তথ্য সংগ্রহ করতে

পারে।

source: https://www.bb.org.bd/sme/checklist.pdf

ব্যাংক লোন নেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

১. সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।

২. কর্মচারীদের নাম, পদবী, এবং মাসিক বেতনের তালিকা।

৩. ইআরসি ও আইআরসি  সার্টিফিকেট (আমদানী ও রপ্তানী ব্যবসার ক্ষেত্রে)।

৪. মজুদ মাল ও তার বর্তমান মূল্যের তালিকা।

৫. স্থায়ী সম্পদের তালিকা ও মূল্য।

৬. দেনাদারের তালিকা।

৭. পাওনাদেরর তালিকা।

৮. বর্তমানে অন্য কোথাও ঋন থাকলে তার বিবরণী।

৯. বাংলাদেশ ব্যাংকের ঈওই রিপোর্ট, এখানে উলেখ্য যে, এই রিপোর্টের ফরম সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানই

১০. উদ্যোক্তাকে সরবরাহ করে এবং উদ্যোক্তা উক্ত ফরম যথাযথভাবে পূরন করে দিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানই

১১. বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিপোর্ট সংগ্রহের আনুষ্ঠানিকতা সম্পনড়ব করে।

ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এসএমই ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

১. ঋণের আবেদনকারী এবং গ্যারান্টার উভয়ের পাসপোর্ট সাইজ ছবি। এখানে উল্লেখ্য যে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী একাধিক
গ্যারান্টার নিতে পারেন। অনেক প্রতিষ্ঠানই মূল গ্যারান্টোরের অতিরিক্ত গ্যারান্টার হিসেবে পরিবাররের সদস্যকে গ্যারান্টার হিসেবে নিয়ে থাকে।

২. গ্যারান্টার ব্যবসায়ী হলে তার ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য রির্পোট ।

৩. ব্যবসার বিগত ১ বৎসরের বিক্রয় ও লাভের হিসাবের বিবরনী।

৪. প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট অব ইনকরপোরেশন এবং মেমোরেন্ডাম অব আর্টিক্যালস ।

৫. প্রাইভেট লিমিটডে কোম্পানীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্তের রেজুলেশন।

৬. লিমিটেডকোম্পানীর ক্ষেত্রে অডিট রিপোর্ট

ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এসএমই ঋণ প্রাপ্তির (পার্টনারশীপ ব্যবসার) ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

১. পার্টনারশীপ ব্যবসার ক্ষেত্রে আরজেএসসি এবং নোটারী পাবলিক দ্বারা নোটারাইজড পার্টনারশীপ ডীড।
২. ঋণ গ্রহন/ হিসাব খোলার জন্য পার্টনারদের রেজুলেশন।

উল্লেখিত কাগজপত্র মোটামোটিভাবে সমস্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই ঋণ গ্রহণের জন্য প্রয়োজন হয়। এছাড়াও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনবোধে ঋণ আবেদনকারীর কাছ থেকে অন্য প্রয়োজনীয় দলিলাদি ও তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।

এখানে সুস্পষ্টভাবে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় কি কি বা  ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় বর্ণনা করা হলো এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সময়ে সময়ে কিছু নিয়মকানুন কাগজপত্র নতুন ভাবে চেয়ে থাকে, সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন সময়ে আপডেট করে থাকে সুতরাং আপনি যে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চাচ্ছেন সেই ব্যাংকের ওয়েবসাইট টি একবার ঘুরে আসতে পারেন।

আরো জানুন কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়