২০২৬ সালের কোটিপতি: যে ৬টি ব্যবসা আপনাকে কোটিপতি করতে পারে

একবার ভাবুন তো, আপনি এমন একটি ঘরে বসে আছেন যেখানে হাজার হাজার ব্যবসার ব্লুপ্রিন্ট আপনার সামনে রাখা। কোনোটা সফলতার আলোয় ঝলমল করছে, আবার কোনোটা ব্যর্থতার অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। গত ছয় বছর ধরে একটি ১০০ মিলিয়ন ডলারের কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আমি ঠিক এই কাজটিই করে আসছি। ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যবসা বিশ্লেষণ করে আমি দেখেছি, সাফল্য কোনো জাদুমন্ত্র নয়, বরং সঠিক সময়ে সঠিক সুযোগটি খুঁজে নেওয়ার একটি শিল্প।

আজকের এই দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে—যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), মুদ্রাস্ফীতি আর প্রযুক্তির নিত্যনতুন আবিষ্কার সবকিছু বদলে দিচ্ছে—সেখানে ব্যবসার পুরনো নিয়মগুলো আর কাজ করছে না। কিন্তু এই পরিবর্তনের মধ্যেই লুকিয়ে আছে কিছু অসাধারণ সুযোগ। এমন কিছু ব্যবসা, যা দেখতে হয়তো খুব সাধারণ বা “বোরিং”, কিন্তু নীরবে অসংখ্য মানুষকে কোটিপতি বানিয়ে দিচ্ছে।

আসুন, সেই ছয়টি ব্যবসার জগতে ডুব দেওয়া যাক।

১.   AI ব্যবসা

যখনই আমরা AI-এর কথা শুনি, আমাদের চোখে ভেসে ওঠে OpenAI বা Google-এর মতো বিশাল কোম্পানির ছবি। সবাই ভাবে AI-এর আসল খেলাটা সেখানেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সেই বিলিয়ন ডলারের সুযোগের ট্রেন অনেকটাই চলে গেছে। আসল টাকা এখন অন্য কোথাও।

“প্রতিযোগিতা পরাজিতদের জন্য। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি ছোট বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করা।” – পিটার থিয়েল (Peter Thiel), PayPal-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

এই উক্তিটিই আজকের AI ব্যবসার মূলমন্ত্র। বড় কোনো AI মডেল তৈরির পরিবর্তে, নির্দিষ্ট কোনো ইন্ডাস্ট্রির ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যার সমাধান করুন।

ধরুন, একজন ছাদ নির্মাণকারী বা রুফার। তার মূল কাজ ছাদে উঠে কাজ করা, কিন্তু দিনের শেষে তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে গ্রাহকদের জন্য কোটেশন বা খরচের হিসাব তৈরি করতে হয়। এটা একটা সময়সাপেক্ষ এবং বিরক্তিকর কাজ। এখন যদি আপনি এমন একটি AI টুল তৈরি করেন যা কয়েকটি ছবি বা তথ্য থেকেই নির্ভুলভাবে কোটেশন তৈরি করে দেয়, তাহলে সেই রুফার তার মূল্যবান সময় ফিরে পাবে। আর সেই সময়ের জন্য সে আপনাকে টাকা দিতে দ্বিতীয়বার ভাববে না।

বাজার গবেষণা সংস্থা Grand View Research-এর মতে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত AI বাজার বার্ষিক ৩৭.৩% হারে বাড়বে। আসল সুযোগটি লুকিয়ে আছে এই বৃদ্ধির মধ্যেই। Roofr-এর মতো কোম্পানিগুলো ঠিক এই কাজটিই করছে। তারা AI ব্যবহার করে স্যাটেলাইট ছবি থেকে ছাদের মাপজোখ করে রিপোর্ট তৈরি করে, যা ঠিকাদারদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় বাঁচিয়ে দেয়। এটি কোনো flashy আইডিয়া নয়, কিন্তু এটি একটি বাস্তব সমস্যার সমাধান।

 ভাবুন, আপনি কোন ইন্ডাস্ট্রিকে চেনেন? সেখানকার কোন কাজটি সবচেয়ে পুনরাবৃত্তিমূলক এবং বিরক্তিকর? সেই কাজটিকেই স্বয়ংক্রিয় করার জন্য একটি AI টুল তৈরি করুন।

২. স্বাস্থ্য শুধু শরীর নয়, একটি কমিউনিটি

করোনা মহামারী আমাদের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনার ধরনকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। মানুষ এখন গতানুগতিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর পুরোপুরি নির্ভর না করে নিজের স্বাস্থ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। তারা শুধু সুস্থ থাকতে চায় না, তারা দীর্ঘজীবী হতে চায়, সেরা পারফর্ম করতে চায় এবং সমমনা মানুষদের একটি গোষ্ঠীর অংশ হতে চায়।

“মানুষ পণ্য বা পরিষেবা কেনে না। তারা সম্পর্ক, গল্প এবং জাদু কেনে।” – সেথ গোডিন (Seth Godin), মার্কেটিং গুরু।

এই “সম্পর্ক, গল্প এবং জাদু” তৈরি করার মধ্যেই লুকিয়ে আছে হাইব্রিড ওয়েলনেস ক্লাবের সাফল্য।

শুধু সাপ্লিমেন্ট বিক্রি না করে, ভাবুন তো আপনি একটি মাসিক সাবস্ক্রিপশন বক্স দিচ্ছেন, যার সাথে থাকছে একজন পুষ্টিবিদের সাথে জুম সেশন এবং একটি প্রাইভেট WhatsApp গ্রুপ, যেখানে সদস্যরা একে অপরকে উৎসাহিত করছে। এখানে আপনি শুধু একটি পণ্য বিক্রি করছেন না, আপনি একটি লাইফস্টাইল, একটি পরিচয় এবং একটি কমিউনিটি বিক্রি করছেন।

McKinsey-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ওয়েলনেস বাজার এখন ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। মানুষ এখন ব্যক্তিগত ফলাফল এবং কমিউনিটির জন্য প্রিমিয়াম মূল্য দিতে প্রস্তুত। WHOOP এর মতো কোম্পানিগুলো এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তারা শুধু একটি ফিটনেস ট্র্যাকার বিক্রি করে না, বরং এর সাথে ডেটা অ্যানালিসিস, ব্যক্তিগত কোচিং এবং একটি শক্তিশালী কমিউনিটি তৈরি করেছে, যার জন্য ব্যবহারকারীরা মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি দেয়।

ছোট করে শুরু করুন। একটি নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য লক্ষ্য (যেমন – ভালো ঘুম, মানসিক চাপ কমানো) নিয়ে কাজ করুন। পণ্য, কোচিং এবং কমিউনিটিকে একসাথে করে একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ তৈরি করুন।

৩. সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসাটি হয়তো আপনার পাশের বাড়িতেই: হোম সার্ভিসেস

কেউই হয়তো প্লাম্বার বা ইলেকট্রিশিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখে না, কিন্তু যখনই বাড়িতে পাইপ ফেটে যায় বা বিদ্যুৎ চলে যায়, তখন একজন নির্ভরযোগ্য প্লাম্বার বা ইলেকট্রিশিয়ান খুঁজে পাওয়াটাই সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হয়ে দাঁড়ায়। এই জরুরি চাহিদাই হোম সার্ভিস ব্যবসাকে একটি চিরসবুজ ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত করেছে।

“আপনার ব্যবসার সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো জাদুকরী মানুষ খুঁজবেন না। সমাধান হলো একটি সঠিক সিস্টেম।” – মাইকেল গারবার (Michael E. Gerber), “The E-Myth Revisited”-এর লেখক।

বেশিরভাগ হোম সার্ভিস ব্যবসা ছোট থাকে কারণ তাদের কোনো সিস্টেম নেই। এখানেই আপনার সুযোগ।


আপনাকে নিজে হাতে কাজ করতে হবে না। আপনি একজন আধুনিক অপারেটরের ভূমিকা পালন করুন। Google Ads ব্যবহার করে লিড আনুন, কাজটি করার জন্য দক্ষ কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করুন এবং নিজে গ্রাহক পরিষেবা, শিডিউলিং এবং রিভিউ ব্যবস্থাপনার দিকে মনোযোগ দিন। একটি সিস্টেম তৈরি করুন যা বারবার একইরকম ভালো ফলাফল দেয়।


গবেষণা সংস্থা Technavio-এর মতে, আমেরিকার হোম সার্ভিস বাজার বার্ষিক ৮% এর বেশি হারে বাড়ছে। Neighborly একটি দুর্দান্ত উদাহরণ। এটি একটি হোল্ডিং কোম্পানি যা Mr. Rooter বা Molly Maid-এর মতো অনেক হোম সার্ভিস ব্র্যান্ডকে কিনে নিয়ে তাদের অপারেশনকে আধুনিক সিস্টেমের মাধ্যমে উন্নত করেছে এবং একটি বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য তৈরি করেছে।

একটি সার্ভিস (যেমন – এসি মেরামত, পেস্ট কন্ট্রোল) বেছে নিন। সেটিকে প্রযুক্তি এবং ভালো মার্কেটিং দিয়ে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলুন।

৪.  নিশ্ সোশ্যাল মিডিয়া কনসাল্টিং

প্রতিটি ব্যবসার মালিক জানেন যে তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকা উচিত, কিন্তু খুব কম লোকই জানে কীভাবে তা করতে হয়। একজন ডেন্টিস্ট দাঁতের চিকিৎসা করতে পারদর্শী, সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট তৈরিতে নয়। এখানেই আপনার প্রয়োজন।

“কনটেন্ট হলো রাজা, কিন্তু কনটেক্সট বা প্রেক্ষাপট হলো ঈশ্বর।” – গ্যারি ভেইনারচাক (Gary Vaynerchuk)।

এর অর্থ হলো, শুধু কনটেন্ট পোস্ট করলেই হবে না। কোন ইন্ডাস্ট্রির জন্য, কোন প্ল্যাটফর্মে, কোন ধরনের কনটেন্ট কাজ করবে, তা বোঝাটা আরও বেশি জরুরি।


আপনি সব ধরনের ব্যবসার জন্য কাজ না করে শুধু একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র বেছে নিন। যেমন – “রিয়েল এস্টেট এজেন্টদের জন্য টিকটক মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ” বা “ডেন্টিস্টদের জন্য ইনস্টাগ্রাম গ্রোথ কনসালটেন্ট”। যখন আপনি একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন, তখন ক্লায়েন্টরা আপনাকে বেশি অর্থ দিতে দ্বিধা করে না।


অনেক ছোট এজেন্সি আছে যারা শুধু ডেন্টিস্ট বা আইনজীবীদের জন্য শর্ট-ফর্ম ভিডিও তৈরি করে মাসে হাজার হাজার ডলার আয় করে। কারণ তারা শুধু ভিডিও পোস্ট করে না, তারা এমন কৌশল তৈরি করে যা সরাসরি ব্যবসায় নতুন ক্লায়েন্ট বা লিড এনে দেয়। আপনি যখন নিজেকে শুধু একজন “কনটেন্ট ক্রিয়েটর” না ভেবে “রেভিনিউ ড্রাইভার” হিসেবে তুলে ধরবেন, ক্লায়েন্টরা আপনাকে ছাড়তে চাইবে না।

 একটি ইন্ডাস্ট্রি এবং একটি প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন। প্রথম ক্লায়েন্টের জন্য দুর্দান্ত ফলাফল এনে দিন এবং সেই সফলতাকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করে আরও ক্লায়েন্ট খুঁজুন।

৫. টেকসই পণ্যের ব্যবসা

পরিবেশবান্ধব পণ্য এখন আর শুধু শখের বিষয় নয়, এটি এখন ব্যবসার জন্য একটি অপরিহার্য প্রয়োজন। সরকারগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করছে।

“যারা টিকে থাকে, তারা সবচেয়ে শক্তিশালী বা সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রজাতি নয়; বরং তারা পরিবর্তনের সাথে সবচেয়ে বেশি খাপ খাইয়ে নিতে পারে।” – চার্লস ডারউইন (Charles Darwin) (প্রায়শই তার নামে উদ্ধৃত)।

এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে підприємীদের সাহায্য করার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ব্যবসার সুযোগ।


ভাবুন, একটি রেস্তোরাঁর মালিক রাতারাতি জানতে পারলেন যে তার ব্যবহৃত সমস্ত প্লাস্টিকের পাত্র আইনত নিষিদ্ধ। তাকে এখন পরিবেশবান্ধব বিকল্প খুঁজে বের করতে হবে। আপনি যদি সেই সমাধানটি সরবরাহ করতে পারেন, তাহলে আপনি শুধু একজন সরবরাহকারী নন, আপনি তার ব্যবসার একজন অপরিহার্য অংশীদার।


২০২১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের Single-Use Plastics Directive কার্যকর হওয়ার পর অনেক ব্যবসাকে রাতারাতি তাদের প্যাকেজিং পরিবর্তন করতে হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার মতো রাজ্যেও একই ধরনের আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। Ecovative Design-এর মতো কোম্পানিগুলো মাশরুমের মূল থেকে তৈরি পচনশীল প্যাকেজিং তৈরি করে এই সমস্যার সমাধান করছে।

 আপনার দেশের বা রাজ্যের পরিবেশগত আইনগুলো নিয়ে গবেষণা করুন। দেখুন কোন কোন পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আসছে এবং তার পরিবেশবান্ধব বিকল্প সরবরাহ করার ব্যবসা শুরু করুন।

৬. প্রিমিয়াম পেট কেয়ার

মানুষ তার পোষ্য প্রাণীকে সন্তানের মতো ভালোবাসে। আর এই ভালোবাসার সাথে মিশে থাকে এক ধরনের অপরাধবোধ। কাজে যাওয়ার সময় পোষ্যের করুন চোখের দিকে তাকিয়ে যে অপরাধবোধ হয়, সেই অপরাধবোধই মানুষকে তাদের পোষ্যের জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে উৎসাহিত করে।


আপনি শুধু কুকুরের খাবার বিক্রি করছেন না, আপনি “স্বাস্থ্যকর, মানুষের খাওয়ার উপযোগী উপাদান দিয়ে তৈরি সাবস্ক্রিপশন খাবার” বিক্রি করছেন যা মালিকের দুশ্চিন্তা কমায়। আপনি শুধু একটি কলার বিক্রি করছেন না, আপনি একটি “স্মার্ট কলার” বিক্রি করছেন যা পোষ্যের স্বাস্থ্য এবং অবস্থান ট্র্যাক করে মালিককে মানসিক শান্তি দেয়।

American Pet Products Association (APPA)-এর তথ্য অনুসারে, ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট এবং ২০২০ সালের মহামারী—উভয় সময়েই, যখন মানুষ অন্যান্য ক্ষেত্রে খরচ কমিয়েছে, তখনও পোষ্য প্রাণীর পেছনে খরচ বেড়েছে। The Farmer’s Dog (প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন ডগ ফুড) বা Fi (স্মার্ট কলার) এর মতো কোম্পানিগুলো এই মানসিকতার উপর ভিত্তি করেই মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা তৈরি করেছে।

আপনার জন্য সুযোগ: এমন একটি পণ্য বা পরিষেবা তৈরি করুন যা পোষ্য মালিকদের জীবনকে সহজ করে এবং তাদের অপরাধবোধ কমায়। সেটি হতে পারে একটি অ্যাপ, একটি সাবস্ক্রিপশন বক্স বা একটি বিশেষায়িত পরিষেবা।

সাফল্যের পথ সবসময় চাকচিক্যময় হয় না। ২০২৬ সালের কোটিপতিরা হয়তো পরবর্তী সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ তৈরি করবে না, বরং তারা একজন রুফারের সময় বাঁচাবে, একজন পোষ্য মালিকের অপরাধবোধ কমাবে, অথবা একজন রেস্তোরাঁর মালিককে আইন মেনে চলতে সাহায্য করবে।

আসল সুযোগটি লুকিয়ে আছে বাস্তব সমস্যার বাস্তব সমাধানের মধ্যে। এখন প্রশ্ন হলো, আপনি কোন সমস্যাটি সমাধান করতে প্রস্তুত?

Leave a Comment