সাধারণত কোন কিছু পাবার ইচ্ছা বা আকাঙ্খাকে চাহিদা বলে। কিন্তুু চাহিদা বলতে কেবল আকাঙ্খাকাকেই বুঝায় না , বরং যে আকাঙ্খা পুরন করার মত অর্থ আছে এবং তা খরচ করার ইচ্ছা আছে তাকে চাহিদা বলে । যেমন- একজন ভিক্ষুকের মোটরগাড়ী ক্রয় করার আকাঙ্খা থাকতে পারে কিন্তু তার তা ক্রয় করার অর্থ নাই । তাই কেবল তার আকাঙ্খাই চাহিদার সৃষ্টি করতে পারেনা । আকাঙ্খাকে পুরণ করার জন্য তার ক্রয় ক্ষমতা থাকতে হবে । আবার আকাঙ্খা ও ক্রয় ক্ষমতা থাকলেই চাহিদা হয়না – কৃপনের কোন পন্য/সেবা পাবার আকাঙ্খা আছে কিন্তু ঐ অর্থ ব্যয় করার ইচ্ছা নাই । এ ক্ষেত্রে চাহিদা হবেনা । চাহিদার সৃষ্টি হতে হলে আকাঙ্খা ও ক্রয় ক্ষমতার সাথে সাথে অর্থ ব্যয় করার ইচ্ছা থাকতে হবে।
পণ্য ডিজাইন কি?
ধরা যাক একজন ক্রেতা আপনার উৎপাদিত দ্রব্য ক্রয় করতে ইচ্ছুক। এক্ষেত্রে ক্রেতার জন্য পণ্য ডিজাইন করার জন্য আমরা যে যে বিষয় বিবেচনা করব তা হল-
ক. ক্রেতার পন্যের অভাব থাকে
খ. পন্য ক্রয়ের আর্থিক সামর্থ্য থাকে এবং
গ. অর্থ ব্যয় করার ইচ্ছা থাকে
পন্যের উপর নির্ভর করে আমরা ছয় ভাবে চাহিদা নিরূপন করতে পারি:
ক. পন্যের প্রকারভেদ
খ. পন্যের আকৃতি
গ. পন্যের উৎপাদন ধারা
ঘ. আপনার কোম্পানির বিক্রয়
ঙ. দেশের সকল উৎপাদনকারীর বিক্রয়
চ. সারা দেশের বিক্রয়
স্থান বিশেষে চাহিদাকে তিন ভাবে নিরূপন করা যায়:
ক. স্থানীয় এলাকা ভিত্তিক
খ. জেলা ভিত্তিক
গ. রপ্তানীর দেশ অনুযায়ী
সময়ের উপর ভিত্তি করে চাহিদাকে নিম্নভাবে পরিমাপ করা যায়:
ক. স্বল্প সময়ের চাহিদা খ. মধ্যম কালীন চাহিদা গ. দীর্ঘ মেয়াদী চাহিদা
পন্যের চাহিদার চলক/নির্নায়ক
একটি পন্যের চাহিদা মূলত: নিম্নলিখিত চলকের উপর নির্ভরশীল:
ক. পন্যের দাম
খ. ভোক্তা বা ক্রেতার আয়
গ. সময় ঘ. ভোক্তার রুচি ফেশন
ঙ. পরিপূরক পন্যের দাম
চ. বিকল্প দ্রব্য/ দাম ছ. জন সংখ্যা
জ. বিক্রেতার সংখ্যা ঝ. যোগাযোগ/ প্রচার ইত্যাদি
ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপন:
পন্যের ভবিষ্যৎ চাহিদা তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে গড়ে তোলা যায়:
ক. ক্রেতা পন্য/সেবা সম্পর্কে কি বলে
খ. ক্রেতা পন্য/সেবা দিয়ে কি করে
গ. ক্রেতা পন্য/সেবা নিয়ে কি করেছে
ক.ক্রেতা দ্রব্য সম্পর্কে কি বলে: এখানে পন্যের সম্ভাব্য ক্রেতা বিক্রয় প্রতিনিধি বা বাজার বিষয়ক বিশেষজ্ঞের অভিমত নিব। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বাজার বিষয়ক গবেষনা চালানো হয়। যার মাধ্যমে বাজারের ভবিষ্যৎ চাহিদা বাহির করা হয়।
খ.ক্রেতা দ্রব্য দিয়ে কি করে: এক্ষেত্রে দ্রব্যটি পরীক্ষামূলক ভাবে বাজারে ছাড়া হয় প্রধানত: জনগনের/ক্রেতার বিভিন্ন ধরনের অভিমত জানার জন্য।
গ.ক্রেতা দ্রব্য নিয়ে কি করেছে: ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপনে এ বিষয়েটির মাধ্যমে ক্রেতার দ্রব্য ব্যবহারের অতীত অভিজ্ঞতা আলোচনা করা হয়। যার আলোকে একটি পন্যের ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপন করা হয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে একজন উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা কেন ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপন করবে ? ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপনের মাধ্যমে একজন উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা তার বাজার চাহিদা সম্পর্কে আগাম ধারনা পেয়ে থাকে। এতে করে তার পক্ষে ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরনের জন্য কি পরিমান মূলধন, কাঁচামাল, লোকবল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদির প্রয়োজন হবে সে ব্যপারে সঠিক পরিকল্পনা করতে সক্ষম হয়। যার ভবিষ্যৎ চাহিদা ও ব্যবসা পরিকল্পনা প্রনয়ন যতটা সঠিক, তার পক্ষে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকা ততটা সহজ। এছাড়াও ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপনের জন্য পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়।
- পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বা ভোক্তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপন করা সম্ভব।
- ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপনের জন্য গত কয়েক বৎসরের বিক্রির পরিমান দেখলে ভবিষ্যৎ চাহিদা নিরূপন করা সম্ভব।
- আপনার উৎপাদিত পন্য সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান আছে বা যারা কেনা বেচা করেন এমন ধরনের লোকের মতামত থেকেও ভবিষ্যৎ চাহিদা নির্ণয় করা যেতে পারে।
বিক্রির ধারা:
লক্ষ্য বাজারে সরবরাহ নির্ভর করে বাজারে মোট চাহিদা,উৎপাদনকারীর সংখ্যা, পন্যের বিক্রেতার সংখ্যা,পন্যের দাম, পন্যের গুন, সময় ইত্যাদির উপর। সরবরাহের নিয়ম হল দাম বাড়লে সরবরাহ বাড়ে, ও দাম কমলে সরবরাহ কমে যায় অর্থনীতিবিদদের মতে মানুষের অর্থের উপর ভবিষ্যৎ বিক্রি নির্ভর করে এবং পন্যের বিক্রির পরিবর্তন বিভিন্ন কারনের জন্য হতে পারে। নীচে কয়েকটি কারন দেওয়া হলো-
- ক্রেতা/সম্ভাব্য ক্রেতার আয় বাড়লে বিক্রি বাড়ে
- যোগাযোগ/প্রমোশন বাড়লে বিক্রি বাড়ে
- পরিপূরক পন্যের দাম কমলে আসল পন্যের বিক্রি বাড়ে
- বিকল্প পন্যের দাম কমলে বিক্রি কমে
- পন্যটির জীবন চক্র অবক্ষয়ের দিকে গেলে বিক্রি কমে।