ট্রেড লাইসেন্স কি?
ব্যবসা শুরু করার প্রথম ধাপ হলো ট্রেড লাইসেন্স । এটি অনুমোদন রাষ্ট্রের কাছ থেকে নেয়া হয় । ব্যবসার প্রথম এবং অবিচ্ছেদ্য একটি ডকুমেন্ট হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স । আমাদের দেশে অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী আছেন, যারা ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করছেন । কিন্তু এটা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং আইন বিরোধী । ব্যবসার লাইসেন্স মানে হচ্ছে ব্যবসার অনুমতি পত্র । তাই আপনার বৈধ ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করা বাধ্যতামূলক ।
আপনি যদি ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে ট্রেড লাইসেন্স করা বাধ্যতামূলক । প্রশ্ন হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স কিভাবে করবেন? সাধারণত সিটি কর্পোরেশন, মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা জেলা পরিষদ থেকে এটি প্রদান করা হয় । শুধুমাত্র ব্যবসার উদ্দেশ্যে ট্রেড লাইসেন্স করা যায় । ট্রেড লাইসেন্স সম্পর্কে না জানার কারণে অনেকেই ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকেন । প্রথমে আমরা জানবো-
কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করবেন?
আবেদনের যোগ্যতা ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশী বয়সে যে কোন প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষ ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন । তবে তাকে অবশ্যই কোন না কোন ব্যবসায়ের সাথে জড়িত থাকতে হবে ।
যথাযথ কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ সিটি করপোরেশন, পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন । ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার পূর্বে দু’টি বিষয়ে সিন্ধান্ত নিনঃ
- যথাযথ কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের জন্য ব্যবসার অবস্থান নির্ধারণ এবং
- ব্যবসার প্রকৃতি নিরূপণ ।
আপনার ব্যবসার অবস্থান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ নির্বাচন করুন । যদি আপনার ব্যবসার অবস্থান সিটি কর্পোরেশন এলাকা যেমনঃ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালে হয় তা হলে আপনাকে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন হতে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে ।
যাদি আপনার ব্যবসার অবস্থান কোন মিউনিসিপ্যাল (পৌরসভা) এলাকায় হয়ে থাকে তাহলে এ এলাকার মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ হতে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।
অন্যান্য ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ যেমনঃ ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ থেকে সংগ্রহ করতে হয় ট্রেড লাইসেন্স আবেদন ফরম ।
ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম
- ধাপ–১: নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে ।
- ধাপ–২: প্রতিষ্ঠান/কারখানা/কোম্পানি লিমিটেড হলে মেমোরেন্ডাম অব আর্টিক্যালস আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
- ধাপ–৩: প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠান/কারখানা কোম্পানি’র পার্শ্ববর্তী অবস্থান/স্থাপনার বিবরণসহ নকশা আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
- ধাপ–৪: প্রতিষ্ঠান/কারখানা/কোম্পানি’র পার্খবর্তী অবস্থান/স্থাপনার মানচিত্রের অনাপত্তিনামা আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
- ধাপ–৫: কারখানা/নি,এন.জি ষ্টেশন/দাহ্য পদার্থের ব্যবসার ক্ষেত্রে বিক্ষোরক অধিদপ্তর/ফায়ার সার্ভিস ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র/অনুমতিপত্র আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে ।
- ধাপ–৬: আবেদনাকারীর ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে ।
- ধাপ–৭: প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ১৫০/- টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাস্পে অঙ্গীকারনামা আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।
- ধাপ–৮: প্রতিষ্ঠান প্রেস/পত্রিকা হলে ডিক্লারেশন পত্র আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে |
- ধাপ–৯: ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর স্থানটি নিজের হলে সিটি করপোরেশনের হাল নাগাদ ট্যাক্সের রশিদ এবং ভাড়ায় হলে ভাড়ায় চুক্তিপত্র/রশিদ আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে ।
যাবতীয় কাগজপত্র দাখিলের পর করপোরেশন -এর ইন্সপেক্টর প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্ত করার পর নির্দিষ্ট পরিমান ফি আদায় করে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করবেন ।
ট্রেড লাইসেন্স প্রতি বছর নবায়ন করতে হয় , ট্রেড লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ।
ট্রেড লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ হবে আপনার ব্যবসার অবস্থান অনুযায়ী । এটা যেকোনো বিভাগীয় শহর বা আপনার সিটি কর্পোরেশন অথবা সংশ্লিষ্ট পৌরসভা উপজেলা পরিষদ অথবা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে এই লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন ।
ধরন বা ক্যাটাগরি নির্বাচন :
আপনি যখন ব্যবসা শুরু করতে চাইবেন, তখন আপনাকে ব্যবসার ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হবে । আপনি যদি ভুল ক্যাটেগরী নির্বাচন করেন তাহলে পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যা সম্মুখীন হতে পারেন । ২০১৬ সালের গেজেট অনুযায়ী ২৯৪ টি ক্যাটাগরিতে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয় । ভালোভাবে আপনার ব্যবসার প্রকৃতি বিবেচনা করে নির্ধারিত ক্যাটেগরী নির্বাচন করতে হবে ট্রেড লাইসেন্স ধরন খুঁজে পেতে ক্লিক করুন- ট্রেড লাইসেন্স ধরন
ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
সাধারণ ব্যবসার এর ক্ষেত্রে (general business license)
- দোকান ভাড়ার চুক্তি পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, নিজের দোকান হলে ইউটিলিটি বিল এবং হালনাগাদ হোল্ডিং ট্যাক্সপরিশোদের এর ফটোকপি
- আবেদনকারীর ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ।
- ব্যবসা যদি যৌথভাবে পরিচালিত হয় তাহলে ১৫০/৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে পার্টনার শিপের অঙ্গীকারনামা/শর্তাবলী জমা দিতে হবে ।
ফ্যাক্টরির/কারখানা এর ক্ষেত্রে (Factory / factories in the case of a trade license)
- পরিবেশের ছাড়পত্রের কপি ।
- প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরি/কারখানার পাশ্ববর্তী অবস্থান/স্থাপনার বিবরণসহ নকশা/লোকেশন ম্যাপ।
- প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরি/কারখানার পাশ্ববর্তী অবস্থান/স্থাপনার মালিকের অনাপত্তিনামা ।
- ফায়ার সার্ভিস এর ছাড়পত্র ।
- ঢাকা সিটিকর্পোরেশন এর নিয়ম – কানুন মেনে চলার অঙ্গিকারনামা ১৫০/৩০০ টাকারজুডিশিয়ার স্ট্যাম্প এ স্বাক্ষরিত।
অনান্য ব্যবসায়ের জন্য ট্রেড লাইসেন্সঃ
• সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স: ভাড়ার রশিদ অথবা চুক্তিপত্রের সত্যায়িত কপি, এবং হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের কপি।
• শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ট্রেড লাইসেন্স: উপরোক্ত সবগুলি ডকুমেন্টসমূহ, এবং এর সাথে-
– পরিবেশ সংক্রান্ত অনাপত্তি পত্র
– প্রতিষ্ঠানের অবস্থান চিহ্নিত মানচিত্র
– অগ্নিনির্বাপণ প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র
– ডি.সি.সি. র নিয়মাবলি মেনে চলা হবে এমতে ১৫০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারপত্র
– ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
• ক্লিনিক অথবা ব্যক্তিগত হাসপাতালের ক্ষেত্রে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদন।
• লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে:
– মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল
– সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন
• ছাপাখানা ও আবাসিক হোটেলের ক্ষেত্রে – ডেপুটি কমিশনারের অনুমতি
• রিক্রুটিং এজেন্সির ক্ষেত্রে – মানবসম্পদ রপ্তানি ব্যুরো কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স
• অস্ত্র ও গোলাবারুদের ক্ষেত্রে – অস্ত্রের লাইসেন্স
• ঔষধ ও মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রে – ড্রাগ লাইসেন্সের কপি
• ট্রাভেলিং এজেন্সির ক্ষেত্রে – সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি
ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর
ই–কমার্স ব্যবসার জন্য কি ট্রেড লাইসেন্স লাগে ?
অনলাইন কমার্স ব্যবসার জন্য লাইসেন্স অবশ্যই করতে হবে । তবে আপনি যদি অস্থায়ীভাবে কিছুদিনের জন্য ওয়েবসাইট অথবা ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা করতে চান, সে ক্ষেত্রে লাইসেন্স না করে ব্যবসা করা যেতে পারে । কিন্তু লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করলে আপনি কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন । বিশেষ করে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আপনি ব্যাংকে হিসাব খুলতে পারবেন না । আপনি বেশি অ্যামাউন্ট এর কোন পণ্য অর্ডার পাওয়ার সাপ্লাই করতে পারবেন না । কোন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না । বিভিন্ন ট্রেড বডিজ, চেম্বার এর সদস্য হতে পারবেন না ।
ট্রেড লাইসেন্স আইন বা বিধিমালা শুধুমাত্র একটি ব্যবসার জন্য ব্যবহার করা যাবে । কোনোক্রমে অন্য কোন ক্যাটাগরির ব্যবসার জন্য এটি ব্যবহার করা যাবে না । নতুন ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে আবার নতুন করে আরেকটি ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে । একটি ট্রেড লাইসেন্স শুধুমাত্র একটি ব্যবসায়ে ব্যবহার করতে পারবেন । এটি কোন অবস্থাতেই হস্তান্তরযোগ্য নয় ।
প্রশ্ন:ট্রেড লাইসেন্স কি এবং কেন প্রয়োজন?
উত্তর: নাম শুনেই নিশ্চই বুঝতে পারছেন ট্রেড লাইসেন্স মানে ব্যবসার অনুমতি পত্র। আপনি যদি একজন নতুন উদ্যোক্তা হয়ে থাকেন, দেশের আইন অনুসারে ব্যবসা পচিালনা করার জন্য আপনাকে স্থানীয় কর্তপক্ষের মাধ্যমে ব্যবসায়ের লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। সেটাই ট্রেড লাইসেন্স। ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স অপরিহার্য।
প্রশ্ন : স্থানীয় কতৃপক্ষ বলতে কি বুঝায়?
উত্তর: স্থানীয় সরকারকে বুঝায়। সাধারণত মেট্রো সিটিতে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভায় পৌর কতৃপক্ষ আর গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে থাকে।
প্রশ্ন : ট্রেড লাইসেন্স করতে কি কি লাগে ?
উত্তর: খুব বেশী কিছু নয়। তিন কপি পার্সপোর্ট সাইজ ছবি, যদি একাধিক অংশীদার থাকেন তাহলে প্রত্যেকের তিন কপি করে ছবি। ভোটার আইড কার্ড এর কপি, এবং যে বাড়িতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে বা অফিস রয়েছে তার বাড়িওয়ালার সাথে সম্পাদিত চুক্তির ফটোকপি। যে চুক্তিটি আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পাদিত হয়েছে। এই তিনটি জিনিস অতি দরকার। আর বর্তমানে ইউটিলিটি বিলের কপি জমা দিতে হয় অথবা সার্ভিস চার্জ এর রশিদ। আমাদের দেশে অনেক কিছুই লাগে আবার অনেক কিছু ছ্ড়াাই অনেক কিছু হয়ে যায়।
প্রশ্ন : ট্রেড লাইসেন্স ফি কত?
উত্তর : ব্যবসা অনুসারে ট্রেড লাইসেন্স এর খরচ। যেমন ঠেলাওয়ালার জন্য হয়তো ২শ টাকা, আর আমদানী রাফতানী এর জন্য তা হয়তো ২০ হাজার টাকা। তবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এর অধীনে ৫শ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত রেট আছে। ই কমার্সের যেহেতু কোনো ক্যাটাগরি নেই তাই সফটওয়ার, আইটি বা জেনারেল সাপ্লায়ার হিসেবে লাইসেন্স নিতে হয়। এজন্য সরকারী ফিস ৮৫০ থেকে ১৭০০ কিন্তু আপনার খরচ পড়বে কম বেশী ৪ হাজার। আর কোন ফার্মের সাহায্য নিলে ৫ হাজার। এখান থেকে জেনে নিন ব্যবসাভেদে ট্রেড লাইসেন্স ফি এর তালিকা।
প্রশ্ন : ই- কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য খরচ কেমন ?
উত্তর: আসলে আমাদের সব কিছু একটু ব্যাকডেটেড, আমাদের ব্যবসায়িক তালিকায় এখনো ই কমার্স যুক্ত হয়নি। এই ক্যাটাগরিতে এখনো লাইসেন্ দেয়া হয়না। তবে আইটি অথবা সফটওয়ার ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স নেয়া যেতে পারে। এজন্য দাপ্তরিক খরচ ১১শ টাকা থেকে ১৫শ কিন্তু অন্যান্য খরচ যেমন সাইনােবর্ড ট্যাক্স, ফিজিক্যাল ভিজিট ট্যাক্স আর সংশ্লিস্ট খরচ মিলিয়ে এটা ৪-৫ হাজারে গিয়ে ঠেকে।
প্রশ্ন : কোথায় গিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বানাবো ?
উত্তর: আপনি সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ অফিস, সিটি কর্পোরেশন অথবা পৌরসভায় গিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বানাতে পারেন। তবে আজকাল অনেক কনসালটেন্সি ফার্ম আছে যারা নির্দিস্ট সার্ভিস চার্জ এর বিনিময়ে এসব কাজ করে দিয়ে থাকে। নিজে ঝামেলা পোহাতে না চাইলে কোনো ফার্মের হেল্প নিতে পারেন।
০২. এরপর যে জিনিসটি সবচে বেশী প্রয়োজন তা হলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকে একাউন্ট খোলা। সব ব্যাংকে এই একাউন্ট খোলা যায়। (ব্যাংক একাউন্ট বিষয়ে এর ব্যাপারে আলাদা একটি লেখা পরে পোষ্ট করবো, ইনশাআল্লাহ)। কোনো ব্যাংকে গিয়ে আপনি বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
০৩. এরপর ক্ষেত্র বিশেষে মূসক বা ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন দরকার হয়। এক্ষেত্রে সরকারী ফিস এক থেকে ৫ হাজার টাকা হলেও বাস্তবে কাজ করতে গেলে চার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাগে। যাদের আমদানী রফতানীর ব্যবসা আছে তাদের আরো বেশী টাকা লাগেত পারে।
প্রশ্ন : ট্রেড লাইসেন্স ও কোম্পানী রেজিস্ট্রেশন এর মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তর: ক.ট্রেড লাইসেন্স ব্যবসা ও পেশার অনুমতি আর কোম্পানী রেজিস্ট্রেশন হলো ব্যবসা এনজিও সমাজসেবা প্রভৃতির জন্য।
খ.ট্রেড লাইসেন্স একটা নির্দিস্ট এরিয়ায় কার্যালয় স্থাপনের জন্য আর কোম্পানী রেজিস্ট্রেশন সারা বাংলাদেশের জন্য।
গ.ট্রেড লাইসেন্স হলে ব্যবসার করার জন্য কোম্পানী রেজি: এর প্রয়োজন নেই কিন্তুকোম্পানী রেজিস্ট্রেশন হলেও ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়।
ঘ.ট্রেড লাইসেন্স আপনি প্রতিষ্টানের যে নাম দেবেন তা আবার অন্য কেউ দিতে পারবে আর কোম্পানী রেজিস্ট্রেশন করলে একই নামে আর কোনো ব্যক্তি কোম্পানী খুলতে পারবেনা। যদি খোলে আপনি আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
ঙ.ট্রেড লাইসেন্স এর খরচ ব্যবসার ক্যাটাগরি অনুসারে আর কোম্পানী রেজিস্ট্রেশন এর খরচ কোম্পানী কতটাকা বিনিয়োগ করবে তার উপর। কোং রেজি খরচ ৩০,০০০ থেকে শুরু।
চ.ট্রেড লাইসেন্স সাধারণ স্থানীয় ব্যবসার নিয়ম নীতির উপর চলে আর কোম্পানী রেজিস্ট্রেশন এ কোম্পানী গঠিত হয় কোম্পানী আইন অনুসারে। এর নির্দিস্ট ফরমম্যাট রয়েছে। ছ.ট্রেড মার্ক: আর আলদাভাবে পন্য বা ব্রান্ড রেজিস্ট্রেশন এর জন্য ট্রেড মার্ক নিবস্ধন করতে হয়। যাতে সে নাম এবং মার্কটি অন্যকেউ ব্যবহার করতে না পারে। যেমন বাটা কোকাকোল এগুলো কেউ হুবহু একই রকম নাম এবং লেখা ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রশ্ন : আমি ব্যবসা করি চট্টগ্রামে, কিন্তু কাস্টমার সব ঢাকায়। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় মাল পাঠতে হবে? আমাকে কোথায় এবং কয়টা ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
উত্তর: যেখানে আপনার অফিস বা ব্যবসার ঠিকানা শুধু সেখানেই ট্রেড লাইসেন্স নেবেন। তবে ঢাকায় যদি আরেকটা অফিস নেন। তখন এখানে আরেকটা ট্রেড লাইসেন্স এর প্রশ্ন আসবে। কিন্তু ব্যবসা করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স কোনো বাঁধা নয়।
প্রশ্ন : ট্রেড লাইসেন্স করার পর কোনো প্রয়োজনে নাম ঠিকানা পরিবর্তন করা যায় কি?
উত্তর: ফি প্রদান ও এফিডেবিটের মাধ্যমে যেকোনো তথ্য পরিবর্তণ করা যায়।
প্রশ্ন :একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে কি বিভিন্ন ধরনের পন্য বা ব্যবসা করা যায় ?
উত্তর: বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা একটা ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে করা যায়না। তবে বিভিন্ন রকমের পন্য বিক্রি করা যায়। সেক্ষেত্রে ক্যাটাগরি হবে জেনারেল সাপ্লায়ার।
প্রশ্ন : একটি ট্রেড লাইসেন্স এর মেয়াদ কতদিন? মেয়াদ পূর্ণ হলে কি করতে হবে?
উত্তর: একটি ট্রেড লাইসেন্স এর মেয়াদ এক অর্থ বছর। মেয়াদ শেষ হলে নবায়ন ফি দিয়ে আপনি নবায়ন কওে নিতে পারবেন। তবে নবায়ন না করলে যে আপনার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে তা নয়। বিষয়টা হলো নবায়ন করলে আপনার একটা আইনগত বৈধতা থাকলো।
প্রশ্ন: : এক এলাকার ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে কি অন্য এলাকায় ব্যবসা করা যায়?
উত্তর: আইনগতভাবে করা যায়না। তবে বাংলাদেশে এটা কমন বিষয়, আবাসিক এলাকায় যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। তাদের কারো ঠিকানা সে এলাকা নয়। সাধারণত সিটি কতৃপক্ষ আবাসিক এলাকার নামে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করেনা বলে তারা অন্য ঠিকানা দিয়ে লাইসেন্স নিয়ে থাকেন।
অনলাইনে ই-ট্রেড লাইসেন্স করবেন কিভাবে?
আপনি এখন অনলাইনে ও ট্রেড লাইসেন্স এর আবেদন করতে পারেন । আবেদন করার জন্য সরকারি নিবন্ধন সাইটে গিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হবে । আপনি কিভাবে আবেদন করবেন তার বিস্তারিত জানার জন্য নিচের লিঙ্কে ঘুরে আসতে পারেন।
ই-ট্রেড লাইসেন্স নিবন্ধন করতে পারবেন এই লিঙ্কে- ই-ট্রেড লাইসেন্স
এছাড়া etrade license সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে ও কিভাবে ফরম ফিলাপ করবেন ও ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতি জানার জন্য নিচের ভিডিওটি মনোযোগ সহকারে দেখতে পারেন –