সফল উদ্যোক্তা হওয়ার মূলমন্ত্র : সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে ঘন্টার বদলে মিনিট হিসাব করে কাজ করতে হবে । সেরা সফল উদ্যোক্তা তিনি ২৪ ঘণ্টার বদলে পুরো ১৪৪০ মিনিট নিয়ে সচেতন থাকেন । তাদের জীবনে সময়ের মূল্য সবচেয়ে বেশি ।
বিল গেটসকে নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে । তার ব্রিফকেস থেকে একবার কয়েক হাজার ডলার পড়ে গিয়েছিল । তিনি সেটা আর তোলেননি । কারণ সেটা তুলতে গিয়ে তার যতটা সময় খরচ হতো, সেই সময় কাজে লাগিয়ে তিনি আরো বেশি টাকা আয় করতে পারতেন । তাদের সফল উদ্যোক্তা হতে হলে প্রতিটি মিনিট এর ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে । যদি এক ঘন্টা কাজ করেন, তবে খেয়াল রাখুন 60 মিনিট যেন কাজে লাগে ।
একই সময়ে একটি কাজে মনোযোগ দিন
আপনি যদি একই সময়ে একটি কাজ করেন, তাহলে গভীর মনোযোগ দিতে পারবেন এবং যারা এভাবে কাজ করেন তারা একটানা দুই ঘন্টা গভীর কাজে নিমগ্ন হতে পারেন । এ সময় তারা অন্য কারো সাথে কথা বলেন না । কোন দিকে মনোযোগ দেন না । এতে করে তাদের কাজের মান বেড়ে যায় ।
ক্যালেন্ডার চিহ্নিত করে কাজ করুন
যারা সফল তারা জীবনের ছোট ছোট কাজগুলোকে ও দৈনন্দিন শিডিউল এর মধ্যে রাখেন । এতে অনেক উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হয় । আপনি যদি সব কাজ সিডিউল করেন তাহলে প্রায় অর্ধেক কাজই আপনি করতে পারবেন না । ছোট ছোট কাজ শিডিউল না করে বরং অতি প্রয়োজনীয় কাজগুলো কে আপনি তালিকা তৈরি করতে পারেন ।
ছোট ছোট কাজ শিডিউল করলে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় । যারা সফল মানুষ তারা দিনের ছোট ছোট কাজগুলো কে শিডিউলে না রেখে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কাজ করেন । অর্থাৎ তারা কোন তারিখে কোন কাজটা শেষ করবেন তার সিডিউল করে রাখেন এবং শুধুমাত্র জরুরী কাজগুলোকে তারিখ দিয়ে চিহ্নিত করে রাখেন । শুধুমাত্র ওই কাজগুলোই করবেন বলে ঠিক করেন।
কোন কাজ ফেলে রাখার পরিবর্তে ফেলে রাখলে কি কি ক্ষতি হতে পারে তা আগে ভাবুন
যারা সফল তারা কাজের আগেই তার ফলাফল বুঝতে পারেন । যখনই আপনার কোন কাজ করতে অলসতা আসবে, তখনই তার ফলাফল টা কে কল্পনা করতে হবে । অর্থাৎ এই কাজটি না করলে এই সময় না করলে কি ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন ।
ব্যবসার বাইরেও আপনার একটি জীবন রাখুন
ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই অনেক ব্যস্ত থাকতে হবে । কিন্তু আপনার পারিবারিক সম্পর্কগুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে । আমরা যদি দেখি যারা সফল যেমন জ্যাক মা, বড় বড় বিলিয়নারদের তাদের বেশিরভাগ অর্থ মানব কল্যাণে ব্যয় করেছেন । কেউ লম্বা ট্যুর করেন, কেউ তাদের গুরুত্বপূর্ণ সময় পারিবারিক অনুষ্ঠানে ব্যয় করেন । পারিবারিক বন্ধন আর ভালোবাসা না থাকলে মানুষের জীবন অর্থহীন । তাই ব্যবসার পাশাপাশি পারিবারিক সম্পর্ক গুলো কেউ গুরুত্ব দিতে হবে ।
মিটিং এর পিছনে অতিরিক্ত সময় নষ্ট করবেন না
আসলে কার্যকরী মিটিং এর সময় এক ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয় । অনেকেই আছেন তাদের বিজনেস মিটিং করতেই অনেক সময় নিয়ে নেন । ফলে কাজের সময় অনেক ক্ষেত্রে কমে যায় । সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলাপ ও সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত কাজে ফিরে যাওয়াটাই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ ।
না বলতে শিখুন
ওয়ারেন বাফেট বলেছিলেন, “সাধারণ সফল মানুষ আর অসাধারণ সফলদের মধ্যে পার্থক্য হলো অসাধারণ সফলরা প্রায় সব কিছুতেই না বলে ।“
আপনি হয়তো জানেন এইটি-টোয়েন্টি রুলস আপনার সফলতার জন্য মাত্র ২০ ভাগ কাজ দায়ী । যদি আপনি ৮০ পার্সেন্ট কাজকে কম গুরুত্ব দিতে পারেন এবং ২০ পার্সেন্ট কাজ কে বেছে নিতে পারেন, তাহলে আপনি অনেক কম কাজ করেও সফল হতে পারবেন ।
সবকিছু একা করতে যাবেন না
আপনার কাজকে বিভাজন করতে হবে । সব কাজ একা করতে যাবেন না । সফল উদ্যোক্তারা সব ব্যাপারে প্রশ্ন করে, আমি কিভাবে কাজটি করতে পারি ? সব দায়িত্ব একজনের কাঁধে না নিয়ে কাজগুলোকে অন্যের উপর অর্পণ করে ঠিকমতো মনিটরিং বা খোঁজখবর রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।
একই কাজ দুইবার করবেন না
যখন যে কাজ শুরু করবেন সেটি শেষ করে অন্য আরেকটি কাজ ধরবেন । একটি কাজ শুরু করে তার মধ্যে অন্য আরেকটি কাজ করে আবার আগের কাজে ফিরে যাওয়া ঠিক না । এতে কাজের কোয়ালিটি মান ভালো হয় না । কাজ শুরু করার আগে একটি ভালো রুটিন প্রস্তুত করুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন । সফল রুটিন কাজের অর্ধেক আপনি যদি আপনার কাজকে গুছিয়ে নিয়ে সময়ের মতো ভাগ করে নিতে পারেন, তাহলে দেখবেন দিনশেষে আপনার সমস্ত কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়ে গেছে ।