গরমে সুস্থ থাকার জন্য, আমাদের কিছু খাবার খাওয়া উচিত যা শরীরকে ঠান্ডা এবং হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। গরমে সুস্থ থাকার জন্য, আপনার খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত এমন কিছু খাবার হল:
পানি:
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা গরমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।পানিশূন্যতা রোধ করতে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখতে নিয়মিত পানি পান করুন।
- প্রতিদিন 2.5-3 লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন।
- তরল পানীয়, যেমন ফলের রস, শরবত এবং লেবুর পানিও পান করতে পারেন।
দই:
- দই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ যা হজমশক্তি উন্নত করতে এবং পেটের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- গরমের দিনে নিয়মিত দই খান।
- ফলের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
ডাব:
- ডাবে প্রচুর পরিমাণে ইলেক্ট্রোলাইট থাকে যা ঘামের মাধ্যমে হারানো খনিজ পদার্থ পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত ডাবের শরবত খান।
- বাজারে তৈরি ডাবের শরবতের পরিবর্তে ঘরে তৈরি ডাবের শরবত খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ফল:
- তরমুজ: তরমুজ ৯২% পানি সমৃদ্ধ, তাই এটি গরমের জন্য একটি আদর্শ ফল। এতে ভিটামিন এ, সি এবং লাইকোপেনও রয়েছে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
- ডাব: ডাবের পানিশূন্যতা রোধ করার ক্ষমতা রয়েছে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে।
- ফুটি: ফুটিতেও প্রচুর পরিমাণে পানি এবং ভিটামিন সি থাকে।
- বেল: বেলের শরবত গরমের দিনে একটি ঠান্ডা এবং রিফ্রেশিং পানীয়। এটি পেটের সমস্যাগুলি প্রশম করতেও সাহায্য করে।
- আনারস: আনারসে ব্রোমেলাইন নামক এনজাইম থাকে যা হজমে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন সি এবং ম্যাঙ্গানিজও রয়েছে।
শাকসবজি:
- শসা: শসাতে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং ইলেক্ট্রোলাইট থাকে। এতে ভিটামিন কেও রয়েছে।
- পালং শাক: পালং শাকে লোহা, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন এ থাকে।
- লাউ: লাউ একটি ঠান্ডা শাক যা পেটের সমস্যাগুলি প্রশম করতে সাহায্য করে।
- পুঁইশাক: পুঁইশাকে ভিটামিন এ, সি এবং কে রয়েছে।
- টমেটো: টমেটোতে লাইকোপেন থাকে, যা একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
অন্যান্য:
- মধু: মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি গলা ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে।
- নারকেল জল: নারকেল জলে ইলেক্ট্রোলাইট থাকে যা পানিশূন্যতা রোধ করতে সাহায্য করে।
- ভাত: ভাত একটি হালকা খাবার যা গরমের জন্য ভাল।
- মুরগির মাংস: মুরগির মাংস হজম করা সহজ একটি চর্বিহীন প্রোটিন।
কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত:
- তেলে ভাজা খাবার: তেলে ভাজা খাবার হজম করা কঠিন হতে পারে এবং গরমে আপনাকে আরও বেশি গরম করতে পারে।
- লাল মাংস: লাল মাংস হজম করা কঠিন হতে পারে এবং গরমে আপনাকে আরও বেশি গরম করতে পারে।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রায়শই চিনি এবং লবণ বেশি থাকে, যা আপনাকে পানিশূন্য করতে পারে।
- ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়: ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় আপন
গরমে বাসা ঠাণ্ডা রাখার কিছু কার্যকর উপায়:
সূর্যের আলো প্রতিরোধ:
- জানালায় পর্দা বা সানশেড ব্যবহার করুন: সূর্যের সরাসরি আলো ঘরে প্রবেশ রোধ করতে দিনের বেলা জানালায় পর্দা বা সানশেড ব্যবহার করুন। হালকা রঙের পর্দা ব্যবহার করা ভালো কারণ এগুলো তাপ প্রতিফলিত করে।
- বাইরের দেয়ালে গাছ লাগান: লতা জাতীয় গাছ বা ঘন পাতাওয়ালা গাছ বাইরের দেয়ালে লাগালে ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ কমবে।
- জানালার কাচে সোলার ফিল্ম ব্যবহার করুন: সোলার ফিল্ম জানালার কাচের উপরে লাগানো হয় যা তাপ প্রতিফলিত করে এবং ঘর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
বাতাস চলাচল বৃদ্ধি:
- সিলিং ফ্যান ব্যবহার করুন: সিলিং ফ্যান ঘরের গরম বাতাস উপরে তুলে ঠান্ডা বাতাস নীচে নামিয়ে আনে।
- টেবিল ফ্যান ব্যবহার করুন: টেবিল ফ্যান জানালার সামনে রেখে বাইরের ঠান্ডা বাতাস ঘরে টেনে আনতে পারেন।
- রাতে জানালা খুলে রাখুন: রাতে যখন বাইরের তাপমাত্রা কম থাকে তখন জানালা খুলে রাখলে ঠান্ডা বাতাস ঘরে প্রবেশ করবে।
- এক্সজস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন: রান্নাঘর ও বাথরুমে এক্সজস্ট ফ্যান ব্যবহার করলে গরম ও আর্দ্র বাতাস বেরিয়ে যাবে।
অন্যান্য টিপস:
- ঘরের দেয়াল ও ছাদে হালকা রঙ ব্যবহার করুন: গাঢ় রঙ তাপ শোষণ করে, তাই হালকা রঙ ব্যবহার করলে ঘর ঠান্ডা থাকবে।
- বিদ্যুৎ সরঞ্জাম ব্যবহার কমিয়ে দিন: বিদ্যুৎ সরঞ্জাম ব্যবহার করলে তাপ উৎপন্ন হয়। তাই যতটা সম্ভব বিদ্যুৎ সরঞ্জাম ব্যবহার কমিয়ে দিন।
- গরমের সময় রান্না কম করুন: রান্না করলে ঘরে তাপ বাড়ে। তাই গরমের সময় রান্না কম করে ঠান্ডা খাবার বেশি খান।
- নিয়মিত গোসল করুন: নিয়মিত গোসল করলে শরীর ঠান্ডা থাকবে এবং ঘাম কম হবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন: পানিশূন্যতা রোধ করতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
- হালকা রঙের পোশাক পরুন: হালকা রঙের পোশাক তাপ প্রতিফলিত করে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
- ঘরের ভেতরে গাছপালা রাখুন: গাছপালা ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- বরফ ব্যবহার করুন: টেবিল ফ্যানের সামনে বরফের পাত্র রাখলে ঠান্ডা বাতাস তৈরি হবে।