সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা কোনটি?
- কোচিং সেন্টার খুলতে পারেন
- টি- শার্ট ও জুতার ব্যবসা
- ফুলের স্টল
- রিপেয়ারিং যেমন, মোবাইল ও ল্যাপটপ
- YouTube চ্যানেল তৈরি
- ফাস্ট ফুডের দোকান
- মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা
- অর্গানিক ফুড
- ওয়ান টাইম গ্লাস, প্লেট এবং কাপ
- অনলাইন কোর্স
ক্যাফে/কফিশপ (Cafe or Coffee Shop)
ক্যাফে বা কফিশপের চাহিদা ক্রমশই বাড়ছে শহর কিংবা মফস্বলে। সঠিক কৌশল আর পরিকল্পনা নিয়ে চলতে পারলে এটি বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার একটি। অল্প টাকায় ব্যবসা শুরু সম্ভব। তাছাড়া চা বা কফি শপের চাহিদা সারা বছরই থাকে এবং বিভিন্ন সময়ে যেমন নববর্ষ ঈদ-পূজা কিংবা নির্বাচনের সময় চা কিংবা কফি চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। তাই সব সময় চাহিদা সম্পন্ন কফি শপ কিংবা চায়ের দোকান বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা।
ক্যাটারিং (Catering)
আরেকটি অন্যতম বেশি লাভের ব্যবসা হল ক্যাটারিংয়ের ব্যবসা। বিয়েবাড়ি থেকে অফিসের বার্ষিক সম্মেলন ক্যাটারিয়ের চাহিদা সর্বত্র। বড় শহর হোক বা মফস্বল, উত্সবে অনুষ্ঠানে যেকোনও জায়গাতেই ডাক পড়ে ক্যাটারারদের। এই ব্যবসাটি মূলত শহরকেন্দ্রিক। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাওয়ানোর জন্য বা মেহমানদারীর জন্য লোক প্রয়োজন, যাদের লোকের সংকট থাকে তারা ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হয় এবং এই ব্যবসা শুরু করার জন্য বলতে গেলে তেমন কোনো পুঁজির প্রয়োজন হয় না।
ট্রাভেল আর ট্যুরিজম (Travel & Tourism)
ভোজনরসিক হওয়ার পাশাপাশি বাঙালি ভ্রমণপিপাসুও বটে, ফলে মানুষকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া কম খরচে বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক অল্প পুজিতে ব্যবসা। ট্রাভেল এবং ট্যুরিজম অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ব্যবসা। বাংলাদেশ এখন দিনে দিনে এই ব্যবসাটি আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কারণ মানুষ শহরকেন্দ্রিক জীবনে বড্ড বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে তাই তারা একটু প্রকৃতি ও সমুদ্র বিলাস করতে চায় কিন্তু একার পক্ষে এটি আয়োজন করা কঠিন হয়ে পড়ে, তাই অনেক সময় তারা ট্রাভেল ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠান শরণাপন্ন হয়।
ট্রেকিং এজেন্সি ও ট্রেকিং গিয়ার ভাড়া (Trekking Agency and Trekking Gear on Rent)
মূলতঃ ট্রাভেল এজেন্সি হলেও এই ব্যবসার ধরণ, গ্রাহক, প্রয়োজনীয় দক্ষতা ইত্যাদি অনেকটাই আলাদা। আপনার যদি নিজের পর্যাপ্ত ট্রেকিংয়ের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকে তবেই ভাবুন এই ব্যবসা শুরুর কথা। পাশাপাশি দরকার পাহাড়ের প্রতি ভালবাসা ও প্যাশন।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট (Event Management)
ছোট বড় বিভিন্ন সংস্থা তাদের নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব দেয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলিকে। অত্যন্ত অল্প টাকায় ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট আধুনিক যুগের একটি চাহিদা মানুষ তার নিজের পরিবারের কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠান এখন event-management কোম্পানি কে দিয়ে থাকে। এতে তাদের টেনশন কম হয় এবং বাড়তি দৌড়াদৌড়ির কোন প্রয়োজন হয় না, সমস্ত দায়িত্ব তারা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি কে দিয়ে থাকে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট (Social Media Management)
সামাজিক মাধ্যমের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন কোম্পানি গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও বিজ্ঞাপনের জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নির্ভর করছে। আর এই কাজের জন্য তাদের প্রয়োজন হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের কাজ জানা দক্ষ কর্মী। দিন দিন পত্রিকা কিংবা টিভি বিজ্ঞাপন এর সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কারণ মানুষ এখন ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে নিজেকে বেশি পরিচিত ও জনপ্রিয় করতে চাচ্ছে আর এজন্য সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
হস্তশিল্পের ব্যবসা (Handicraft)
বাংলায় রয়েছে হস্তশিল্পের বিপুল সম্ভার। বিকনা আর দরিয়াপুরের ডোকরা, পিঙ্গলার পটচিত্র, নতুনগ্রামের পেঁচা, ঘুর্ণির মাটির পুতুল, মেদিনীপুরের মাদুর, কুচবিহারের শীতলপাটি. চড়িদার ছৌ মুখোশ রয়েছে হাজারো রকমের হস্তশিল্প। দেশ বিদেশের বাজারে চাহিদাও রয়েছে যথেষ্ট। নিজেদের দক্ষতা আর সৃজনীকে কাজে লাগিয়ে নানা নতুন ধরণের পণ্যও তৈরি করছেন এই সব গ্রামীণ শিল্পীরা। এই সমস্ত হস্তশিল্প নিয়ে অনলাইন বিজনেস করে নিয়মিত লাভ করা সম্ভব। প্রত্যেক মানুষের কিছু নিজস্ব দক্ষতা বা যোগ্যতা রয়েছে যা হয়ত কখনো প্রকাশ পায় না কিন্তু হস্তশিল্প ব্যবসার মাধ্যমে একজন দক্ষ নারী বা পুরুষ তার স্বতঃস্ফূর্ত এবং জন্মগত দক্ষতাকে ব্যবসায়ীক রূপ দিতে পারে এবং এটি খুব ছোট আকারে শুরু করা যায়।
গয়না বানানোর ব্যবসা (Jewelry Handicraft)
হাতের কাজ ও শিল্পে দক্ষতা থাকলে অল্প পুঁজিতে অন্যতম লাভজনক ব্যবসা গয়না বিক্রি। নানা উপাদান জোগাড় করে আপনি নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন আধুনিক ও আকর্ষণীয় গয়না। প্রয়োজন সৃজনী ও উদ্ভাবনী। খুব কম খরচে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব এই উপায়ে। হাতে তৈরি গহনা যেহেতু এক্সক্লুসিভ বা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বহন করে তাই হাতে বানানো গহনা চাহিদা বরাবরই খুব বেশি।
পোশাক তৈরি ও দর্জির কাজ (Tailoring)
পাড়ায় পাড়ায় দর্জির দোকান এক পুরনো ব্যবসা। অভিনব কাট ও ডিজাইনের পোশাক তৈরি করতে পারলে চাহিদা আছে যথেষ্ট। প্রচলিত ডিজাইনের পাশাপাশি তৈরি করুন অভিনব নক্সার ডিজাইন। অতিরিক্ত মূল্যের বিনিময় দ্রুত বানিয়ে দেওয়ার পরিষেবা দিলে চাহিদা বাড়বে। পুরুষ ও মহিলা চাহিদা রয়েছে উভয়ে ক্ষেত্রেই। প্রত্যেক মানুষই প্রতি তিন মাস পর পর পোশাক তৈরি করে থাকে আর পোষাক তৈরীর জন্য তারা দর্জির দ্বারস্থ হয় । নারী কিংবা পুরুষ উভয়ের জন্য ধৈর্যের প্রয়োজন তাই ভালো মানের অভিনব ডিজাইনের পোশাক তৈরি করতে পারলে তার চাহিদা এবং গ্রাহক খুব দ্রুত বেড়ে যায়।
ফটোগ্রাফি (Photography)
ডিজিটাল প্রযুক্তি আসার সঙ্গে সঙ্গে ফটোগ্রাফির ব্যবসা হয়ে গেছে অনেক সহজ আর ঝক্কিহীন। স্টুডিও বা ডার্করুমের আর প্রয়োজন নেই। ভাল ডিএসএলআর ক্যামেরা আর একটা কম্প্যুটার থাকলেই শুরু করা যায় এই ব্যবসা। বিয়ে থেকে কর্পোরেট ইভেন্ট যেকোনও অনুষ্ঠানে ছবি তুলে হতে পারে ভাল আয়। ডিজিটাল যুগে সবার হাতে মোবাইল থাকলেও ফটোগ্রাফির চাহিদা কিন্তু একটুও কমেনি কারণ ক্যামেরা বা মোবাইল থাকলেইতো সুন্দর ছবি হয়না ছবি তোলার জন্য চাই দক্ষ এবং পাকা হাত, ছবি তোলার কৌশ্ অ্যাঙ্গেল, রেজুলেশন স্টাইল ইত্যাদি ।তাই যিনি বা যারা ফটোগ্রাফিতে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
অর্গানিক ফুড (organic Food)
বর্তমান সময়ে মানুষ অনেক বেশি স্বাস্থ্যসচেতন যে কারণে অর্গানিক ফুড এর চাহিদা অনেক বেশি। মানুষ এখন কেমিক্যাল বিহীন খাবার খেতে চায় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের অর্গানিক ফুড পাওয়া যায়। সেগুলো সংগ্রহ করে যদি কাঙ্খিত ক্রেতার বা কাস্টমারের নিকট পৌঁছানো যায় তাহলে খুব ভালো ব্যবসা করা যায়। বর্তমানে অনেক মহিলা ঘরে বসে ফেসবুক অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অর্গানিক পণ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিক্রি করছে, আপনিও চাইলে আজই শুরু করতে পারেন।
অর্গানিক পণ্যের ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার উপর যে জিনিসটি প্রয়োজন তা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট পণ্য সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান। সরকার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যেমন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মতো বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টারের ব্যবস্থা করছে। এসব প্রশিক্ষন কেন্দ্রে বেকার তরুণদের সম্পূর্ণ ফ্রিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
আপনি চাইলে বানিজ্যিকভাবে খামারের মাধ্যমে এটা শুরু করতে পারে। অতি সামান্য পরিমাণ মূলধন নিয়ে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কেননা আজকাল মানুষেরা শুধু খাবারই অর্গানিক খুঁজে নাহ কাপড়চোপড়, খেলনা, কসমেটিকস, বাচ্চাদের প্রোডাক্ট ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই আজ কাল মানুষ অর্গানিক খুঁজে ।
ওয়ান টাইম গ্লাস, প্লেট এবং কাপ
ওয়ান টাইম গ্লাস প্লেট এবং কাপ পরিবেশবান্ধব তাই এটির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখন পলিথিন এর ব্যবহার অনেক কমে যাচ্ছে। মানুষ বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট যেমন পিকনিক, জন্মদি্ বিয়ে, স্কুল কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠান্ বিভিন্ন ইফতার এই কাগজের তৈরি থালা কাপ অন টাইম গ্লাস ব্যবহার করছে।
যেহেতু প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং এর দাম অনেক বেশি তাই মানুষ এখন ওয়ান টাইম গ্লাস প্লেট কাপ ব্যবহার করছে। এটি দামেও সাশ্রয়ী আর এ ধরনের পণ্য তৈরির জন্য যে মেশিন প্রয়োজন হয় তা এখন দেশে বসে সহজে ক্রয় করা যায়। আপনি ইউটিউবে সার্চ দিলে এ ধরনের মেশিন এর খোঁজ পাবেন এবং বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানই এই মেশিন বিক্রি করে থাকে। এর দাম খুবই কম বলতে গেলে লাখ টাকার মধ্যেই পাবন।
আপনি যদি মেশিন কিনে আর অল্প জ্ঞান দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন তবে, ভবিষ্যতে আপনাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না ।
অনলাইন কোর্স (online course)
বর্তমানে লকডাউন এর কারণে মানুষ ঘরে বসে আছে। যে কারণে যারা ক্রিটিভ এবং উৎসাহী তারা বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান অনুসরণ করছে। তাই অনলাইন কোর্স এখন বেশ জনপ্রিয় । আপনার যদি বিশেষ কোনো ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি এটি কোর্সে রূপান্তর করতে পারেন এবং বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে এমনকি ফেসবুক ইউটিউব প্লাটফর্মে আপলোড করে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
বাস্তব কিছু উদাহারনসহ বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার ধারনা পেতে নিচের ভিডিও টি দেখতে পারেন-